আক্রমণকারী শ্বেতাঙ্গ হলে পশ্চিমারা’সন্ত্রাসী আক্রমণ’ এ শব্দটি ব্যবহার করতে চান না

জাসিন্ডার কথা ও কাজ এক ও অভিন্ন
জাসিন্ডা আরডার্ন মসজিদে আক্রমণের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই বলেছিলেন, “স্পষ্টতই একে এখন একটি সন্ত্রাসী আক্রমণ হিসেবেই শুধু বর্ণনা করা যেতে পারে।”
বিবিসির সাংবাদিক আশিথা নাগেশ বলছেন, “এ ঘটনাটিকে দ্রুত একটি ‘সন্ত্রাসী আক্রমণ’ বলে চিহ্নিত করে মিজ আরডার্ন দেখিযে দিয়েছেন যে তিনি এ ব্যাপারটি সম্পর্কে সচেতন যে আক্রমণকারী শ্বেতাঙ্গ হলে অনেকেই এ শব্দটি ব্যবহার করতে চান না, এমনকি যখন আক্রমণটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তখনো নয়।”
সেই আক্রমণে যারা নিহত হন – তারা ভারত, পাকিস্তান, মিশর, জর্ডন, সোমালিয়া – এরকম নানা দেশ থেকে আসা। কিন্তু আক্রমণের কয়েক ঘন্টা পরই জাসিন্ডা বলেন – ‘যারা নিহত হয়েছে তারা আমরাই’ – এবং তিনি শুধু যে নিউজিল্যান্ডের লোকদের উদ্দেশ্যেই এ কথা বলছিলেন তা নয়।
মি. লাস্টিগ বলছিলেন, ব্রাজিল, চীন, হাঙ্গেরি, ভারত বা তুরস্ক – এমন অনেক দেশ আছে যেখানে নেতারা এক সম্প্রদায়কে আরেকটির বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেন।
কিন্তু জাসিন্ডা যখন বললেন ‘দে আর আস’ – তখন বিভেদ নয়, ঐক্যের ডাক দিয়েছেন।
তা ছাড়া হিজাব পরে, ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে ধরে তিনি সহমর্মিতা দেখিয়েছেন তাও প্রশংসিত হয়েছে। ঘটনার পর পার্লামেন্টে জাসিন্ডা আরডার্ন তার বক্তব্য শুরু করেন ইসলামী স্বাগত জানানোর উক্তি ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে।
সব সফল নেতার মতই জাসিন্ডা আরডার্ন জানেন – একটি শব্দের শক্তি কত এবং তিনি সেগুলো ব্যবহার করেছেন ক্ষত সৃষ্টির জন্য নয়, বরং নিরাময়ের জন্য – বলছেন মি. লাস্টিগ।
এর ফলে যেসব নেতাকে ‘দক্ষিণপন্থী স্ট্রংম্যান’ বলে বর্ণনা করেন রাজনৈতিক ভাষ্যকারেরা – যেমন আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প, হাঙ্গেরির ভিক্টর অরবান, বা ভারতের নরেন্দ্র মোদী – তাদের সাথে জাসিন্ডা আরডার্নের পার্থক্য কোথায় – তা সবার চোখে স্পষ্ট হয়েছে।
জাসিন্ডাম্যানিয়া কথাটা এখন সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছেছবির কপিরাইটGETTY IMAGES
Image caption
জাসিন্ডাম্যানিয়া কথাটা এখন সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে
ওই নেতাদের সবারই রাজনৈতিক কেরিয়ার গড়ে উঠেছে অনুদার মুসলিম-বিরোধী কথাবার্তার মধ্যে দিয়ে।
মি. লাস্টিগ বলছেন, ‘অভিবাসীতে শহর ভরে যাচ্ছে’ নিকাব-পরা মুসলিম মহিলাদের ‘লেটারবক্স বা ব্যাংক ডাকাতের মতো দেখাচ্ছে’ এরকম কথা জাসিন্ডা আরডার্নের মুখে শোনা যাচ্ছে না।
তা ছাড়া তিনি শুধু কথায় না কাজে বিশ্বাসী। তিনি নিউজিল্যান্ডের বন্দুক আইন কঠোর করা এবং বর্ণবাদ দূর করার কথা বলছেন।
নিউজিল্যান্ডের মানুষ এ জন্যই তার পাশে দাঁড়িয়েছে।
‘জাসিন্ডাম্যানিয়া’ এখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে, তবে বিশ্বের অন্য নেতাদের ওপরএর কতটা প্রভাব পড়ে তা এখনো দেখার বিষয়।
BBC
More News from আন্তর্জাতিক
-
এবার ব্রিটেনের অমর একুশে ফেব্রুয়ারী ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে যেমন ছিল (ভিডিও সহ )
-
ভারতের সেরামকে ১০ লাখ ডোজ করোনার টিকা ফেরত নিতে বলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা
-
-
কানাডা সরকারের ঘোষিত ১৩ সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকায় ‘ইসলামিক স্টেট বাংলাদেশ’
-