পাখি আর বন্য প্রাণীর জন্য ভালোবাসা

উপমহাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী লতা মঙ্গেশকরের সেই চিরসজীব ও চিরঅম্লান গান ‘নিঝুম সন্ধ্যায় ক্লান্ত পাখিরা বুঝিবা পথ খুঁজে পায়’ কিংবা ‘যা রে যারে উড়ে যা পাখি’। আবার আরেক কিংবদন্তি শিল্পী কিশোর কুমারের গাওয়া ‘একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে ফিরবে না…’। এই পাখিকে নিয়ে দেশে দেশে অসংখ্য গান, কবিতা লেখা হয়েছে। আর লেখার একটাই কারণ পাখিদের প্রতি মমত্ববোধ ও ভালোবাসা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত কবিতা রয়েছে, যার নাম ‘দুই পাখি’। পাখি একটি প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হয়েছে লালনের গানে। আবার প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে পাখির এক অন্য রূপ রয়েছে। যার বহিঃপ্রকাশ দেখি ‘যাও পাখি বলো তারে সে যেন ভোলে না মোরে’।
পাখির জন্য মানুষের ভালোবাসার কমতি নেই। আর কমতি নেই বলেই সরকারের মধ্যেও এই প্রতিচ্ছায়া দেখা মিলছে। সরকারি খাস জমিতে পাখি আর বন্য প্রাণীর আবাসস্থল উপযোগী বনাঞ্চল তৈরি করার জন্য রাজশাহী বিভাগের একজন আবেদন করেন। আবেদনের সঙ্গে তিনি বেশ কিছু যুক্তি তুলে ধরেছেন। এই আবেদন নিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে সভা হওয়ার আগে বন বিভাগের মতামত নেয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে ভূমি মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়। শুধু তাই নয়, তাদেরও মতামত নেয়া হয়। ভূমি মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে। যার প্রেক্ষিতে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক পাখি ও বন্য প্রাণীর আবাসস্থল উপযোগী প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য তৈরির উদ্যোগ নেয়।
জানা গেছে, এ ব্যাপারে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় বিষয়টি বেশ গুরুত্ব সহকারে অভয়ারণ্য তৈরির জন্য কোনো ধরনের আপত্তি করেনি। বরং বন বিভাগকে সহায়তা করার পরামর্শ দেয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক মো. খলিলুর রহমান নিজেই সভায় উল্লেখ করেছেন, দেশে ক্রমশ পাখি ও বন্য প্রাণীর আবাসস্থল কমে যাচ্ছে। কিন্তু জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে পাখি ও প্রাণী সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। তাই প্রতিটি জেলায় সরকারি খাস জমিতে পাখি ও বন্য প্রাণীর আবাসস্থল গড়ে ওঠা প্রয়োজন রয়েছে।
এদিকে, রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলায় পাখি ও বন্য প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে প্রাকৃতিক অভয়াশ্রম সৃষ্টির জন্য যেসব স্থান আপাতত নির্বাচন করা হয়েছে এর মধ্যে রয়েছে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও জয়পুরহাট। রাজশাহীতে তানোর যে অভয়ারণ্য সৃষ্টি করা হবে সে জমির পরিমাণ ১ দশমিক ৬৫ একর । চাঁপাইনবাবগঞ্জে সদর, শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুর- এখানে প্রতিটিতে রাজশাহীর মতো একই পরিমাণ জমির বন্দোবস্ত করা হবে। তবে গোমস্তাপুরে জমির পরিমাণ ৪ দশমিক ৮৮ একর। নাটোরের সিংড়ায় ১ দশমিক ৬৫ একর জমি। নওগাঁতে খাস জমি নেই বলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। পাবনার সুজানগর ও ইশ্বরদীতে একই পরিমাণ জমির ব্যবস্থা করা হবে। সিরাজগঞ্জে সদর ছাড়াও রায়গঞ্জসহ আরো কয়েকটি উপজেলায় জমির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বগুড়ায় বেশ কয়েকটি স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সারিয়াকান্দি। আবার এখানে বেশ কয়েকটি স্থানে জমির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে খাস জমি নেই বলে ইতিমধ্যে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
More News from ভ্রমণ
-
ভ্রমণ কাহিনী: সহজ শিক্ষা ভিসা ও নাগরিকত্ব লাভের জন্য পর্তুগালের বিকল্প মেলা ভার ( প্রথম পর্ব )
-
-
-
খুলনা বাসীর উদ্যোগে হয়ে গেল জমজমাট ফ্যামিলি পিকনিক ২০১৯ (ভিডিও সহ)
-